সান্তাহারের বাহিরে

কে হচ্ছেন নওগাঁ-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে নৌকার কান্ডারি

সান্তাহার ডেস্ক ::  উপ-নির্বাচন হতে যাচ্ছে নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে। রাণীনগর ও আত্রাই এই দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-৬ ও সংসদীয় আসন-৫১। প্রায় ১যুগ শাসন করার পর গত ২৭জুলাই সাংসদ ইসরাফিল আলম মারা যাওয়ায় আসনটি শুন্য হয়। ইতোমধ্যে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের কয়েক জনের নাম শোনা যাচ্ছে। অনেকেই শুরু করেছেন আগাম নির্বাচনী গণসংযোগ, পথসভা, মিটিং ও সিটিং।

দেশের গন্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে এক সময় রক্তাক্ত জনপদ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল জেলার রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলা। সেই সময় এই জনপদে সর্বহারারা দিনে-দুপুরে মানুষকে জবাই করতো। সর্বহারার অধ্যায় শেষ করতেই উত্থান হয় জেএমবি নামক বাংলা ভাইয়ের। দীর্ঘদিন চলে তাদের নিমর্ম সন্ত্রাসী তাণ্ডব। তারা মানুষদের গোয়ালের গরু রাখেনি, ধানের গোলায় ধান রাখেনি। শুরু করেছিলো লুটপাটের রাজ্য। পরবর্তিতে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর তৎপড়তায় ও সদ্য প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলমের নেতৃত্বে সেই রক্তাক্ত জনপদে ফিরে আসে শান্তির সুবাতাস। বন্ধ হয় জবাই, হানাহানি ও রাহাজানি।

জানা গেছে, ১৯৯১ ও ৯৬সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীর। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক সাংসদ মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান। ২০০১ সালে ইসরাফিল আলমকে পরাজিত করে আলমগীর কবীর বিজয়ী হন। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষের দিকে আলমগীর কবির এলডিপিতে যোগ দেন। একই বছরে এলডিপি থেকে পদত্যাগ করেন। ২০০৮সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম।

তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বুলু। এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরকে পরাজিত করে আবারোও বিজয়ী হন ইসরাফিল আলম। মূলত এ আসনটি চারবার বিএনপির অধীনে থাকলেও ২০০৮ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে।

প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলমের স্ত্রী পারভীন সুলতানা বিউটি বলেন এই আসনে আমি মানুষের কাছে একটি পরিচিত মুখ। স্বামীর পাশাপাশি আমিও বিভিন্ন সময় এই দুই উপজেলার মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছি। যদি প্রধানমন্ত্রী আমাকে সুযোগ দেন তাহলে আমি ইসরাফিলের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করবো ইনশাল্লাহ।

সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন মনোয়ারা হক বলেন আমি ১৯৯৬ সালে সংরক্ষিত আসনে প্রথম এমপি হওয়ার পর থেকে রাণীনগর ও আত্রাইবাসীর জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। তাই প্রধানমন্ত্রী আমার সবকিছু বিবেচনা করে যদি আমার এলাকার মানুষদের সেবা করার সুযোগ দেন তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ্রগ্রহণ করবো।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী বলেন, আমি রাণীনগরের সন্তান। কর্ম আর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আমাকে রাজশাহীতে বসবাস করতে হলেও আমার সব কিছুই আমার এলাকার মানুষের জন্য। গত সংসদ নির্বাচনেও আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। তাই দল যদি আমাকে মনোয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচন করবো এবং শতভাগ বিজয়ী হবো বলে আশাবাদী।

জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন নির্বাচনের আগে অনেক অতিথি পাখিদের দেখা যায়। কিন্তু পরে আর খোঁজ থাকে না। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে অবলম্বন করে এই অঞ্চলের মানুষদের সেবা করতে চাই যদি প্রধানমন্ত্রী আমাকে সেই সুযোগটি দেন।

রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আসাদুজ্জামান নূরুল বলেন আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করেছি আর বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি আগামীতেও করবো। রাণীনগরের সন্তান বলে সবসময় এই অঞ্চলের মানুষের সুখে-দু:খে থাকার চেস্টা করেছি। তাই আমার সবকিছু বিচার-বিবেচনা করে যদি দল আমাকে নৌকা প্রতীক দেয় তাহলে নির্বাচন করবো। তা না হলে নৌকা যে পাবে তার হয়ে কাজ করবো।

এছাড়াও নওগাঁ জেলা যুবলীগের সভাপতি খোদাদাদ খাঁন পিটু, সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায় ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমনের নাম শোনা যাচ্ছে।রাণীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন বলেন যদি প্রধানমন্ত্রী চান তাহলে আমরা আমাদের পছন্দের ব্যক্তিদের তালিকা পাঠাবো। আমি আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলের জন্য স্বাধীনতার পক্ষের একজন সৎ, শিক্ষিত ও নির্ভিক মানুষকেই নৌকা প্রতিক দিবেন। প্রধানমন্ত্রী যাকে মনোনয়ন দিবেন আমরা তার হয়েই কাজ করবো।

সান্তাহার ডটকম/ ১৮ আগস্ট ২০২০ইং /এমএম