দৈনিক সান্তাহার

শখের পল্লী গড়ে তুলেছেন নজরুল

Santahar parkসান্তাহার বশিপুর। সেখানেই গড়ে তোলা হয়েছে ভ্রমণপিপাসুদের জন্য শখের পল্লী। প্রায় ২০ বিঘা জমি নিয়ে গড়া এই পল্লীতে বিনোদনের নানা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অসংখ্য দর্শনার্থী এই পল্লীতে আসছেন।
শখ থেকে গড়ে তোলা শখের এই পল্লী এমনভাবে বাণিজ্যিক প্রসার পাবে, তা ভেবে উঠতে পারেননি পল্লীর প্রতিষ্ঠাতা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম। এই পল্লীতে দর্শনার্থীদের আনন্দ বিনোদন উপভোগ করার জন্য কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে চিড়িয়াখানা। সেখানে বিভিন্ন জীবজন্তুর প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে। পূর্বপাশ ঘিরে করা হয়েছে বিশাল কমিউনিটি সেন্টার, তার পাশ ঘেঁষে স্থাপন করা হয়েছে কনফারেন্স রুম। কাছেই ফাস্টফুড খাবারের জন্য ফুড কর্নার, পিকনিকের জন্য পশ্চিম পাশ ঘিরে বিশাল পিকনিক কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে রিসোর্ট বাংলোও। পল্লীর মধ্যে কয়েকটি বৃহৎ পুকুরও খনন করা হয়েছে। পুকুরগুলোতে প্যানেল বোর্ড স্থাপন করে দর্শনার্থীদের বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাড়ে বসার জন্য স্থাপন করা হয়েছে সুপার চেয়ার। এর পাশাপাশি রয়েছে ক্যাবল কার।
সর্বোপরি ভ্রমণপিপাসুদের জন্য প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শনও রাখা হয়েছে। এই শখের পল্লীতে ১০ টাকা শুভেচ্ছা মূল্য দিয়ে দিনব্যাপী আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। শখের পল্লীর তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলামের পিতা মফিজ উদ্দীন ছিলেন ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। ১৯৩৩ সালে তিনি ব্রিটিশ আঞ্জুমান বোর্ডিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারিও ছিলেন। পরে দেশ মাতৃকার টানে বশিপুর গ্রামে এসে ১৯৬৫ সালে মাত্র পাঁচ হাজার টাকায় ১৮ বিঘা জমি কেনেন। জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ রোপণ করে মনোরম পরিবেশ তৈরি করেন। দিনের বেশির ভাগ সময় তিনি সেখানে লোকজন নিয়ে বৃক্ষের ছায়ায় সময় কাটাতেন। পিতার মৃত্যুর পর সেই স্বপ্ন আগলে ধরেন তার প্রকৌশলী পুত্র নজরুল ইসলাম। তিনি তিন বছর আগে পিতার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ১৮ বিঘা জমির পাশাপাশি আরও ২ বিঘা মাটি ক্রয় করেন এবং গড়ে তোলেন শখের পল্লী। এই পল্লী থেকে এখন নজরুল ইসলামের ভালো আয়ও হচ্ছে। ধারণা পাওয়া গেছে, দর্শনার্থীদের প্রবেশ ফি ছাড়াও কমিউনিটি সেন্টার, কনফারেন্স রুম, ফাস্টফুড, প্যানেল বোর্ড, ক্যাবল কার, নাগরদোলা, রিসোর্ট বাংলো থেকে তার প্রতিদিন মোটা অংকের অর্থ রোজগার হচ্ছে। এ কারণে ওয়াকেবহালরা বলছেন, শখের পল্লী বানিয়ে নজরুল ইসলাম সত্যিই সফল হয়েছেন।

সান্তাহার ডটকম/সান্তাহার ডটকম টিম/১৩-মে-২০১৬ইং