দৈনিক সান্তাহার

এক পায়ে ভর দিয়েই এসএসসিতে ৩.৮৩

Santahar Newsসান্তাহার ডেস্ক:: সান্তাহারের দমদমা গ্রামের গত বছর এসএসসি পরীক্ষার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো স্বর্ণা মনি এবছর এক পায়ে ভর করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সেই স্বর্ণা মনি এসএসসি তে জিপিএ- ৩.৮৩ পেয়েছে। তার এই ফলাফলে পরিবার আত্মীয়-স্বজনসহ গোটা দমদমা গ্রামেই ছড়িয়ে পড়েছে উচ্ছ্বাস। লেখাপড়া শেষে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে চায় স্বর্ণা মনি। সে চায় ভবিষ্যতে শিক্ষক হয়ে তার মতো অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের পাশে দাঁড়াতে।

সান্তাহার ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের ভ্যানচালক মো. হারুন-অর রশিদের ৪ সন্তানের মধ্যে স্বর্ণা মনি তৃত্বীয়।

গত বছর এসএসসি পরীক্ষার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারানো স্বর্ণা মনি ২টি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পরলেও তার অসুস্থতার কারণে বাকি সব পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হয় নি।

অনেক চিকিৎসার পরও তার ১টি পা কেটে ফেলতে হয়েছে।তারপরও দমে যায় নি তার মনোবল। এক পায়ে ভর করেও এবার এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে পাশ করেছে। আর এভাবেই অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিয়ে এগিয়ে চলছে।

সে সান্তাহার কলসা আহসান উল্লাহ ইন্সটিটিউশন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কেন্দ্র ছিলো সান্তাহার হার্ভে সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এক পায়ে ভর করে পরিক্ষা কেন্দ্রে এসে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরিক্ষা দেয়।

ফলাফল প্রকাশের পর শনিবার বিকেলে কথা হয় স্বর্ণা মনির সাথে। সে বলে পরিশ্রম আর ইচ্ছা থাকলে উপাই হবেই।তাই পায়ের শক্তি না থাকলেও মনের শক্তি নিয়েই পথ চলছি। কষ্ট হলেও লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষকতা পেশাকে বেছে নেবো। শিক্ষক হতে পারলে অসহায় ও দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের পাশে থাকবো।

ফলাফল বিষয়ে স্বর্ণা মনি বলে,রেজাল্ট আরো ভালো হতো যদি আমি একদম সুস্থ থাকতাম।এখন সান্তাহার সরকারী কলেজে ভর্তি হবো।

মেয়ের ফলাফলে বাবা মো. হারুন-অর রশিদ জানান, এমত অবস্থায় এ রকম ভালো ফলাফলে আমি অনেক আনন্দিত। তাছাড়া স্বর্ণা মনির বড় দুই ভাই তারাও কলেজ পড়ুয়া ছাত্র এবং ছোট বোন সম্পা, সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। স্বর্ণা মনির ভাই সবুজ ও সজল বলেন আমাদের বোন যখন অসুস্থ অবস্থায় ছিলো তখন সমাজের অনেক মানুষ সে সময় আমাদের সহযোগিতা করেছে এজন্য আমরা চিরকৃতজ্ঞ।

তাছাড়া আমরা সকলের কাছে দোয়া চাই স্বর্ণা মনি যেন আগামীতে আরো ভালো ফলাফল করতে পারে।

এদিকে বাবা মো. হারুন অর- রশিদ তার মেয়ের স্বপ্ন পূরণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

>> সান্তাহার ডটকম/ইএন/৮ মে ২০১৭ইং