সান্তাহারের ইতিহাস ঐতিহ্য

সান্তাহারে খোদেজা খিরমন ও মজিদ

Freedom fighter Santaharসান্তাহার ডেস্ক:: পূর্ব পাকিস্তানে অবাঙ্গালী অধ্যুষিত শহর সান্তাহার। সে সময়ে এ শহরে এদের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজারের বেশি। নিরীহ-শান্তিপ্রিয় বাঙ্গালীর ওপর তাদের নির্যাতন-নিপীড়ন বর্ণনাতীত। একাত্তরের ২৫ মার্চ ঢাকার মত সান্তাহারেও নেমে আসে কালরাত। এদিন রাতে অবাঙালীরা যুগীপুকুরে সে সময়ের খ্যাতিমান হোমিও চিকিৎসক ডা. কিসমতের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ডা. কিসমতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে। মরে গেছে মনে করে ফেলে রাখে বাড়ির পাশে। এরপর আগুন ধরিয়ে দেয় তাঁর বাড়িতে। এতে পুড়ে কয়লা হয়ে শহীদ হন ডা. কিসমতের স্ত্রী খোদেজা বেগম, শাশুড়ি খিরমন বিবি এবং ওই বাড়িতে আশ্রিত আব্দুল মজিদ। পরদিন ২৬ মার্চ সকালে এখবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বাঙ্গালীরা। সে সময় ছাত্রলীগের আদমদীঘি থানা শাখার সভাপতি আজিজুল হক ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোরশেদ খানের আহবানে প্রতিবাদ সভা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় অবাঙালীদের সমুচিত জবাব দেয়া হবে। এই আহবানে সাড়া দিয়ে ২৭ মার্চ সান্তাহারের ছাতনী, ঢেকড়া, পানলা, প্রান্নাথপুর, ডাঙ্গাপাড়া, কেনলাপাড়া, দরিয়াপুর, তারাপুর, মালশন, সান্দিড়া, দমদমা, কাশমিলা, কায়েতপাড়া, উৎরাইলসহ চারপাশের গ্রামের হাজার হাজার স্বাধীনতাকামী মানুষ মিছিল নিয়ে সান্তাহার অভিমুখে আসছিল। সকাল ৮টার দিকে দক্ষিন দিক থেকে কয়েক হাজার বাঙ্গালীর মিছিল রেলওয়ে ইয়ার্ডের পুর্ব পাশে গো-ভাঙ্গায় এলে সান্তাহার রেলওয়ে থানার অবাঙ্গালী পুলিশরা গুলি চালায়। এতে প্রথমে লুটিয়ে পড়েন ঢেকড়া গ্রামের মহাতাব হোসেন। তারপর শহীদ হন একই এলাকার পানলা গ্রামের আখের আলী। শহীদ হন পশ্চিমছাতনী গ্রামের নওগাঁ ডিগ্রী কলেজের ছাত্র এসএম আবু জালাল। অবাঙালীদের নির্বিচারে গুলি ও বোমা বিস্ফোরণে নিরস্ত্র মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পিছু হটে। সবাই পিছু হটলে ওই তিন শহীদের লাশ নিয়ে অবাঙালীরা রেলওয়ে ইয়ার্ড কলোনী মসজিদের সামনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে উল্লাস করে। সূত্র: জনকন্ঠ

>> সান্তাহার ডটকম/ইএন/১১ মার্চ ২০১৭ইং