সান্তাহার জংশন

সান্তাহার লোকোশেডের পরিত্যক্ত জায়গা দখল

Santahar RElwayসান্তাহার রেলওয়ে জংশনের লোকোমটিভ (শেড) বিলুপ্তির পর দীর্ঘ ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও এ জংশন স্টেশনে শেড নির্মাণ না করার ফলে ডকসেডসহ ইঞ্জিন মেরামতের সুবিধাজনক জায়গা না থাকায় উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের ট্রেন চলাচলে বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে ট্রেন যাত্রীদের হতে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনার শিকার। এছাড়াও কোটি কোটি টাকা মূল্যের লোকোমটিভ ইঞ্জিনে বাড়ছে টুর্টি। এখানে লোকোমটিভের নিজস্ব কোন অফিস না থাকায় স্টেশনের ভোজানালয়ে অফিস বানিয়ে লোকোমটিভের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাজ না থাকায় নিরলস দিন কাটাচ্ছেন এবং বিলুপ্তি হওয়া শেডের পরিত্যক্ত জায়গাগুলো প্রভাবশালীরা দখল করে নিচ্ছে।

স্থানীয় রেল সূত্রে জানা যায়, সান্তাহার জংশন স্টেশন থেকে মিটারগ্রেজে দিনাজপুর, বুড়িমারী, লালমনিরহাট, বোনাপাড়ার মধ্যে ১০টিসহ সান্তাহার জংশনের ওপর দিয়ে রাজশাহী, খুলনা ও রাজধানীর মধ্যে প্রতিদিন ৩০টি ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনের সান্টিং ছাড়াও গম ও রাইস সাইলো, পাওয়ার প্লান খাদ্যগুদামের গুডস ট্রেনের সান্টিং করা হয়। এখানকার পূর্বেও লোকোমটিভ শেড বিলুপ্তির পর এখানে ফুয়েলিংয়েরও ব্যবস্থা না থাকায় ইঞ্জিনের তেলের প্রয়োজন হলে শত শত কিলোমিটার দূরে বোনারপাড়া, বা লালমনিরহাট শেডে ফুয়েলিংয়ের জন্য ইঞ্জিন প্রেরণ করতে হয়।
কতিপয় রেল কর্মকর্তার সিদ্ধান্তহীনতার কারণে ব্রিটিশ আমলের স্থাপিত কোটি কোটি টাকা মূল্যের সান্তাহার জংশনের লোকোমটিভ (শেড) ২০০২ সালে বিলুপ্তি ঘোষণা করে এর কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতিসহ পুরো স্থাপনা পানির দামে নিলামে বিক্রি করেন। এরপর থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই জংশন স্টেশনে ডকসেড না থাকায় ট্রিপ ইন্সপেকশনের সময় লোকোমটিভের আন্ডার শিয়ার চেক করা সম্ভব হয় না, ব্রেক ব্লক পরিবর্তন সাপোট বিয়ারিং অবলোকনে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এছারাও বর্ষাকালীন সময়ে খোলা আকাশের নিচে যত্রতত্র ইঞ্জিন ফেলে রাখার কারণে চিমনি দিয়ে পানি প্রবেশ করার কারণে সমস্যাগুলো সহজে সমাধান করা সম্ভব হয় না। এখানে কোন ইসপ্রেস্ট মালামালের বরাদ্দ না থাকায় খুচরা যন্ত্রাংশের অভাবে বিভিন্ন রকমের মেরামত কার্যক্রম বিঘ্নিত ঘটছে। বর্তমানে এখানকার লোকোমটিভ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রেল স্টেশনের একটি ভোজানালয়ের পরিত্যক্ত রুমে অফিসের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এখাকার লোকোমটিভ কর্মকর্তা ও স্টেশন মাস্টার রেলওয়ের বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার প্রতিবেদন পাঠান। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পশ্চিমাঞ্চলের রেল বিভাগ থেকে গত ২৫/৫/২০০৭ তারিখে লালমনিরহাটের তৎকালীন ডিএএমইকে উল্লেখিত সমস্যাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য জরুরি ভিত্তিতে নির্দেশ প্রদান করা হলে তিনি দুদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে মেরামতসহ বিভিন্ন সমস্যাগুলো নিরসনের জন্য প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী রেলওয়ে পশ্চিম জন রাজশাহী বরাবরে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
উল্লেখিত প্রতিবেদনের দাখিলের পরও সমস্যাগুলো সমাধান না করার ফলে বাড়ছে কোটি কোটি মূল্যের লোকোমটিভ ইঞ্জিনের সমস্যা। এ কারণে সান্তাহার জংশনের সকল রেল রুটের ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার ফলে যাত্রীদের ভোগান্তিও দিনদিন বেড়েই চলছে। অপরদিকে বিভাগীয় ভূমি অসাধু কতিপয় রেল কর্মকর্তা প্রভাবশালীদের কৃষি লাইসেন্স প্রদান করায় তারা দখল করে নিচ্ছে বিলুপ্তি ঘোষণা করা লোকোশেডের পরিত্যক্ত মূল্যবান জায়গা। সূত্র: ইনকিলাব
সান্তাহার ডটকম/সান্তাহার ডটকম টিম/০৭-জুন-২০১৬ইং