সান্তাহারের বাহিরে

‘আউটলেট’ দিয়ে নওগাঁ শহরে ঢুকছে পানি

সান্তাহার ডেস্ক :: টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নওগাঁয় আত্রাই ও ছোট যমুনার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে মান্দা উপজেলার তিনটি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আত্রাইয়ের পানি বেড়ে মান্দা উপজেলার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ২০টি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁধ টিকিয়ে রাখতে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

আত্রাই নদের পানি বাড়ায় মান্দা উপজেলার নুরুল্লাবাদ এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি উপজেলার শামুকখোল নমশূদ্রপাড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া চকরামপুর ও কয়লাবাড়ি এলাকায় মূল বাঁধ উপচে সোমবার সকাল থেকে ফসলের মাঠে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। আত্রাইয়ের শাখানদী ফকিরনী ও শিব নদের পানি বেড়ে বাঁধের ভাঙা স্থান দিয়ে ঢুকে পড়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে ছোট যমুনা নদীর পানি বাড়ায় নওগাঁ শহর রক্ষা বাঁধের বাইরে পানি বের করে দেওয়ার নালা (আউটলেট) দিয়ে নদীর পানি শহরে ঢুকতে শুরু করেছে। এতে শহরের কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নওগাঁ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, সোমবার বেলা ২টা পর্যন্ত মান্দা উপজেলার জোতবাজার পয়েন্টে আত্রাইয়ের পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে নওগাঁ লিটন ব্রিজ পয়েন্টে ছোট যমুনার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

মান্দা উপজেলার নুরুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মণ্ডল বলেন, পানির চাপে উপজেলার আত্রাই ও ফকিরনীর উভয় তীরের পারনুরুল্লাবাদ বেড়িবাঁধ, বনকুড়া, চকরামপুর, কয়লাবাড়ি, শহরবাড়ি ভাঙ্গীপাড়া, নিখিরাপাড়া, শামুকখোল, লক্ষ্মীরামপুরসহ অন্তত ২০টি পয়েন্ট চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে শামুকখোল নমশূদ্রপাড়া এলাকায় আত্রাইয়ের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকছে। স্থানীয় লোকজন বাঁধটি টিকিয়ে রাখতে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করছেন। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো এখনই সংস্কার করা না হলে ২০১৭ সালের মতো এবারও বন্যার পানিতে উপজেলার বেশির ভাগ অংশ তলিয়ে যাবে।

বিষ্ণুপুর ইউপির সদস্য ইব্রাহীম হোসেন জানান, ২০১৭ সালের বন্যায় চকরামপুর ও কয়লাবাড়ি বেড়িবাঁধ ভাঙার পর আর মেরামত করা হয়নি। নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব ভাঙনস্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করায় দুই গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হালিম বলেন, নদীর পানি বাড়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।

পাউবোর নওগাঁর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আত্রাইয়ের পানি হু হু করে বাড়ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পানি বাড়া অব্যাহত থাকবে। আবহাওয়া পরিষ্কার হলে দু-এক দিনের মধ্যে পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, পানি বাড়তে থাকায় বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো তদারকি করছেন পাউবোর লোকজন। বাঁধ টিকিয়ে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সান্তাহার ডটকম/০৯ জুলাই ২০২০ইং/এমএম