দৈনিক সান্তাহার

সান্তাহারে লবন মাখিয়ে চামড়া সংরক্ষণ

তরিকুল ইসলাম জেন্টু :: সান্তাহার মালগুদামের আড়তগুলোতে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে লবন মাখিয়ে রাখা হচ্ছে। আড়তদাররা অপেক্ষায় আছেন বড় মহাজনদের। উপজেলায় এবারে কোরবানির পশুর চামড়া অনেক কম দামে কেনাবেচা হয়েছে। মাঝারি মাপের একটি গরুর চামড়া সাড়ে তিন থেকে চারশ’ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে বলে জানা যায়।

চামড়ার মৌসুমি ফড়িয়ারা আশানুরূপ লাভ করতে পারেননি। গ্রাম ঘুরে চামড়া কিনে বেচতে গিয়ে তাদের বিভিন্ন এলাকার আড়তে ছোটাছুটি করতে হয়েছে। আবার তাদের মধ্যে অনেকের লোকসান গুনতে হয়েছে। এদিকে ব্যবসায় চালান (মূলধন) কম থাকায় মহাজনদের অনেকেই কম সংখ্যক চামড়া কিনেছেন। উপজেলার একটি মাদরাসায় এলাকাবাসীদের দান করা কোরবানির ৩২৮টি গরুর চামড়া প্রকার ভেদে গড়দাম হিসাব করে প্রতিটির দাম পড়ে প্রায় ৩০০ টাকা। এতে দেখা যায় ৩২৮টির দাম আসে সর্বমোট ১ লাখ টাকার মতো।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার এলাকায় কোরবানি হওয়া মোট পশু প্রায় ১০ ভাগ গরুর চামড়া পৌর শহরের মালগুদাম আড়তগুলোয় কেনাবেচা হয়েছে। আর বাকি ৯০ ভাগ চামড়া বগুড়া, নওগাঁসহ বিভিন্ন এলাকার আড়তগুলোতে কেনাবেচা হয়েছে বলে জানা যায়। আর এসব চামড়া মৌসুমি ব্যবসায়ী (ফড়িয়ারা) গ্রাম ঘুরে কিনে এনে বিক্রি করেছেন। এবারে বেশির ভাগই ফড়িয়া মহাজনদের কাছ থেকে চালানের সহায়তা পাননি। ফলে চালান না থাকায় অনেক ফড়িয়া চামড়া কিনতে মাঠে নামেননি। আবার যারা নেমেছিলেন বিভিন্ন উপায়ে চালানের টাকা সংগ্রহ এবং চামড়ার দাম মহাজনদের কাছ থেকে কম মিলবে এমন ধারণা নিয়েই মাঠে থেকে চামড়া কিনেছেন। এরপরও অনেককেই লোকসান গুনতে হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক ফড়িয়া সরাসরি বগুড়া, নওগাঁর আড়তে চামড়া বেচেছেন। মালগুদাম আড়তগুলোয় বিগত দিনের চেয়ে এবার কম সংখ্যক চামড়া কেনা হয়েছে। এখন লবণ দিয়ে তা সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে।

সান্তাহার চা-বাগান এলাকায় দারুল উলুম মাদরাসার হিসাব রক্ষক মো. মকতেব আলী জানান, এবারে এলাকাবাসীরা কোরবানির পশুর ৩২৮টি গরু, ২০৯টি ছাগল ও ৩০টি ভেড়ার চামড়া দান করেছেন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক ছিল বড় মাপের চামড়া। এবার চামড়ার দাম বেশি পাওয়া যাবে না তাই চামড়াগুলো খুব দ্রুত বিক্রি করা হয়। এছাড়া ছাগলের চামড়াগুলো ২০ টাকা এবং ভেড়ার চামড়াগুলো ১০ টাকায় স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করা হয়েছে।

সান্তাহার মালগুদাম এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী জামাদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন পথে মূলধন সংগ্রহ করে প্রায় ১ হাজার পিস চামড়া কিনেছেন। তা এখন লবণ মাখিয়ে রাখছেন। মহাজনদের কাছ থেকে বিগত বছরের বকেয়া একটি টাকাও এবারে পাওয়া সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান।

সান্তাহার ডটকম/এমএম/১৮ আগস্ট ২০১৯ইং