দৈনিক সান্তাহার

স্কুলে ফিরতে চায় স্বর্ণা

Santahar sarnamoniসান্তাহার ডেস্ক:: স্কুলছাত্রী স্বর্ণা মণি গত ডিসেম্বরে দুর্ঘটনার শিকার হয়। ডান পায়ে গুরুতর চোট পায় সে। পরে ওই পায়ে ধরা পড়ে ক্যানসার, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেলতে হয় পা’টি। এখন কেমোথেরাপি নিচ্ছে সে। আর স্বপ্ন দেখছে, আবার সে বিদ্যালয়ে যাবে। এ জন্য তার একটি কৃত্রিম পা চাই।
স্বর্ণার বাড়ি সান্তাহার দমদমা গ্রামে। বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে সান্তাহার শহরের আহসান উল্লাহ উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ত। এ ছাড়া শহরের একটি কোচিং সেন্টারে পড়ত। গত ৭ ডিসেম্বর ওই কোচিং সেন্টার থেকে অটোরিকশায় গ্রামের বাড়ি ফিরছিল সে। পথে সান্তাহার সাইলো সড়কে অটোরিকশাটির সঙ্গে একটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে স্বর্ণার ডান পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। এরপর শুরু হয় এসএসসি পরীক্ষা। সে দুটি পরীক্ষা দেয়। এরপর আর পারেনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ওই পায়ে ক্যানসার ধরা পড়ে। চিকিৎসকেরা স্বর্ণাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু স্বর্ণার ভ্যানচালক বাবার পক্ষে বিদেশে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি স্বর্ণাকে সিরাজগঞ্জ খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ২ মার্চ তার পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর কেমোথেরাপি দেওয়া শুরু হয়। ইতিমধ্যে তিন দফা কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার স্বর্ণার বাবা হারুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর যেটুকু জমিজমা ছিল, সব বিক্রি করে এত দিন স্বর্ণার চিকিৎসা চালিয়ে এসেছেন। চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়েছেন, স্বর্ণাকে আরও অন্তত ছয়-সাতটি কেমোথেরাপি দিতে হবে। কিন্তু এর ব্যয়ভার তাঁর পক্ষে বহন করা আর সম্ভব হচ্ছে না। কী করবেন তিনি ভেবে পাচ্ছেন না।
স্বর্ণা বলে, ‘বড় আশা ছিল লেখাপড়া শেষে নিজের পায়ে দাঁড়াব। বাবা-মা ও ছোট ভাইবোনদের পাশে দাঁড়াব। এখন বিছানায় শুয়ে শুয়ে যন্ত্রণায় দিন কাটে। এক পায়ে নিজেই দাঁড়াতে পারি না। মাঝে মাঝে ভাবি, কেউ যদি আমাকে একটা কৃত্রিম পা উপহার দিতেন! আমি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আবার বিদ্যালয়ে যেতাম। লেখাপড়া শুরু করতাম।’
সূত্র: প্রথম আলো
সান্তাহার ডটকম/ইএন/৪ আগস্ট ২০১৬ইং