সান্তাহারের বাহিরে

আদমদীঘিতে করোনা গুজবে আতঙ্কিত মানুষ

সান্তাহার ডেস্ক :: আদমদীঘি উপজেলায় করোনা ভাইরাস নিয়ে ছড়ানো নানা ধরনের গুজবে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত গ্রামের মানুষ। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু কিছু মানুষ একের পর এক গুজব ছড়িয়ে তা বাস্তবায়নে বাঁধা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। তবে সচেতনরা বলছেন, এসব গুজবকে পুরুষের থেকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন গ্রামের মহিলারা।

জানা যায়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গত ২৩ মার্চ জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে খাবার হোটেল, রেস্তোঁরা, চায়ের দোকান, আবাসিক হোটেল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, কোচিং, পার্ক ও খেলাধুলা বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়। ঠিক তখনই উপজেলার বেশ কিছু গ্রামে গুজব ছড়িছে পড়েছে ‘ফ্রিজে মাছ ও মাংস রাখা যাবে না, যদি কেউ রাখে পুলিশ এসে ফ্রিজ ভেঙে ফেলবে’।

এরপর আবারো গুজব ছড়িয়ে পড়ল ‘উপজেলার কৈকুড়ি গ্রামে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে’। এতে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ।

পরে এ বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ জানতে পেরে দ্রুত সেখানে ছুঁটে যান। এঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান জানান, কৈকুড়ি গ্রামের ওই ব্যাক্তি কুমিল্লায় একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করতেন। সেখানে থাকাবস্থায় তার জ্বর ও কাশি হওয়ায় বাড়িতে ফিরে আসেন। বর্তমানে তিনি সুস্থ রয়েছেন। তারপরও তাকে এবং তার পরিবারের সুরক্ষার জন্য ১৪দিন হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিবেশিরা যাতে ১৪দিন ওই পরিবারের সঙ্গে মেলামেশা করতে না পারে এজন্য তার বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি করোনায় আক্রান্ত নন এটি নিছক গুজব। গত শুক্রবার পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা ৮৩জনের মধ্যে ৫২জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত ৩১জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।

এ গুজব শেষ হতে না হতে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে ‘জন্মের ৫ মিনিট পর এক শিশু বলেছে আদা, লং, গোলমরিচ ও কালোজিরা দিয়ে চা বানিয়ে খেলে মরণঘাতী করোনা ভাইরাস হবে না’। এ গুজব শুধু এ উপজেলাতেই নয়, বগুড়া, নওগাঁ, জয়পুরহাটসহ উত্তরের বেশ কয়েকটি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এসবের বৈজ্ঞানিক বা ধর্মীয় কোনো ভিত্তি নেই। তাই গুজবে কান না দিয়ে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সবাইকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। শুধু তাই নয় বর্তমানে গুজব ছড়ানো হয়েছে ‘বাড়ির সামনে অজু করে মাটি খুঁড়লেই বেরুবে সুরমা’ যা চোখে দিলে ভালো হবে করোনা। এগুজবের কথা জানালো সান্তাহার পৌর এলাকার বাপ্পী নামের এক যুবক।

এদিকে করোনা ভাইরাস ঠেকাতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ না মানায় গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার সান্তাহার পৌরশহরের বটতলি এলাকায় মাস্কবিহীন মটরসাইকেল আরোহীকে কান ধরে ওঠ বস করিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়; জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাহিরে বের না হওয়ার জন্য।

এসব গুজবের বিষয়ে আদমদীঘি থানার ওসি জালাল উদ্দীন বলেন, ‘এমনিতেই সাধারণ মানুষ করোনা নিয়ে আতঙ্কে আছে। এর ওপর যদি কেউ নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে অইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সান্তাহার ডটকম/৩০ মার্চ ২০২০ইং/ইএন