দৈনিক সান্তাহার

হারিয়ে গেছে পত্রসাহিত্য, ডাকবাক্সে আসে শুধু সরকারি চিঠি

সান্তাহার ডেস্ক ::  একসময় চিঠিপত্র ছিল যোগাযোগ মাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যোগাযোগ মাধ্যমে ডিজিটালের ছোঁয়ায় ‘পত্রসাহিত্য’ বর্তমান যুগে বিলুপ্তপ্রায়। দূরবর্তী স্বজনের কাছে জরুরি বা আবেগতাড়িত কোনো চিঠি লেখার প্রচলন প্রায় উঠেই গেছে। তার বদলে মানুষের কাছে এখন প্রিয় হয়েছে উঠেছে মুঠোফোন ও কম্পিউটারে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম। ফলে ডাকবাক্সের জৌলুস আর আগের মতো নেই।

ডাকবাক্সে চিঠি ফেলে দিয়ে কবে তার প্রিয়জন সেই চিঠি পাবেন সেই অপেক্ষা এখন আর কেউ করেন না। এই বাস্তবতা শুধু বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার ডাকঘরেই নয় দেশের প্রায় প্রতিটি ডাকঘরের ডাকবাক্সের একই চিত্র। দ্রুততম যোগাযোগমাধ্যম এখন হাতের মুঠোয় থাকায় প্রত্যন্ত গ্রামের বধূও চিঠি লেখাকে সময় নষ্ট করা বলে মনে করেন।

এভাবে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে প্রিয়জনের কাছে হাতে লেখা চিঠি আর জৌলুস ছড়ানো ডাকবাক্সের কদর। এখন ডাকবাক্সে সরকারি চিঠিপত্র ছাড়া আর কোনো চিঠিই পাওয়া যায় না। ফলে ধীরে ধীরে আবেদন হারাচ্ছে চিঠি নিয়ে রচিত আবেগতাড়িত সব গান, কবিতা, সিনেমাগুলো।

সান্তাহার পৌর শহরের কলসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু সায়েম জানান, হাতে লেখা চিঠি ডাকবাক্সের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিয়ে দূরের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ রাখতাম। কিন্তু মোবাইল ও ইন্টারনেটের ব্যবহার দিনদিন বৃদ্ধি পেতে লাগলে চিঠি লেখা বাদ দেই। তবে বর্তমান সময়ের ছেলে-মেয়েদের চিঠিপত্র আদান প্রদান করতে দেখা যায় না।

সান্তাহার পোস্ট অফিসের পোস্টম্যান রশিদ বলেন, বারো-তেরো বছর আগেও প্রবাসে থাকা স্বামী তার স্ত্রীর সাথে হাতে লেখা চিঠির ম্যধ্যমে যোগাযোগ করত। কিন্তু ইন্টারনেটে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার, ইমো, ভাইবার, হোয়টসঅ্যাপ ও ইমেইলের মাধ্যমে যখন থেকে সহজেই যোগাযোগ করা সম্ভব হলো তখন থেকেই কমে গেল চিঠিপত্র আদান প্রদান। এতে এখন আর সাধারণ মানুষের চিঠি আগের মতো আর আসে না তবে আসে শুধু সরকারি চিঠিপত্র।

সান্তাহার পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার আলী আকবর জানান, বর্তমানে পোস্ট অফিসে পার্সেল, বিমা, পরীক্ষার খাতা, সঞ্চয়পত্রের মতো কাজগুলো হচ্ছে। আগের দিনের মতো এখন আর ব্যাপকভাবে চিঠিপত্র লেনদেন হয় না। তবে এখনো কিছু লোকজন আদান-প্রদান করে থাকে।

সান্তাহার ডটকম/ ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ইং/এমএম